এসএসসি: ভূগোল ও পরিবেশ



এসএসসি বিশেষ প্রস্তুতি ভূগোল ও পরিবেশ
Mostafa Kamal
Researcher of DCPL & BDTP / Ph.D (Study)
Affiliated Ph.D Researcher of IOUT & Academic Associate of
Shikshakendra, Hati More, Subash Pally, Siliguri, W.B. INDIA
Chairman of Dynamic Youth Society, Public Library & Study Center
Samsabad, P.S.- Panchbibi, Dist. Joypurhat, N.B. BANGLADESH.
Contact : +88-01911 450 131; E-mail:aboutdynamic@gmail.com



সৃজনশীল অংশের প্রতিটি প্রশ্নে উদ্দীপকের সঙ্গে ৪টি করে প্রশ্ন থাকে। এর মধ্যে দ্বিতীয়টি—অর্থাৎ ‘খ’ ক্রমিকের প্রশ্নটিই হলো ‘অনুধাবনমূলক’। অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর দুই প্যারায় লিখবে।

গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১।    ভূগোল কী?
     উত্তর : সাধারণভাবে ভূগোল বলতে বোঝায় পৃথিবীর বর্ণনা।
     ইংরোজি Geography শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ভূগোল। প্রাচীন গ্রিসের ভূগোলবিদ ইরাটথেনিস প্রথম Geography শব্দটি ব্যবহার করেন। Geo (ভূ বা পৃথিবী) ও graphy (বর্ণনা) শব্দ দুটি মিলে হয়েছে Geography। সুতরাং Geography শব্দের অর্থ পৃথিবীর বর্ণনা।
রিচার্ড হার্ডসন ভূগোলের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, পৃথিবীপৃষ্ঠের পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্যের যথাযথ যুক্তিসংগত ও সুবিন্যস্ত বিবরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয় হলো ভূগোল।

২।    নক্ষত্র কী?
     উত্তর : নক্ষত্র একটি জ্যোতিষ্ক।
     যেসব জ্যোতিষ্কের নিজস্ব আলো আছে, তাদের নক্ষত্র বলা হয়। মহাকাশে অসংখ্য নক্ষত্র রয়েছে। এগুলো জ্বলন্ত্র গ্যাসপিণ্ড। হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম দিয়ে এগুলো তৈরি। সূর্য হচ্ছে পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র এবং সূর্যের নিকটতম নক্ষত্র Proxima Centauri।

৩।    স্থানীয় সময় বলতে কী বোঝায়?
     উত্তর : আকাশে সূর্যের অবস্থান থেকে যে সময় স্থির করা হয়, তাকে স্থানীয় সময় বলে।
     পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে সব সময় ঘুরছে। পৃথিবীর যে অংশটি পূর্ব দিকে, সে অংশে আগে সূর্যোদয় বা সকাল হয়। পৃথিবীর আবর্তনের ফলে কোনো একটি স্থানে সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপরে আসে, তখন ওই স্থানে মধ্যাহ্ন। ওই স্থানের ঘড়িতে তখন দুপুর ১২টা ধরা হয়। এই মধ্যাহ্ন থেকেই দিনের অন্যান্য সময় ঠিক করা হয়। সময় নির্ধারণের এই পদ্ধতিকে স্থানীয় সময় বলা হয়। প্রতি ১ দ্রাঘিমার জন্য সময়ের পার্থক্য ৪ মিনিট।

৪।    বায়ুমণ্ডল বলতে কী বোঝো?
     উত্তর : যেসব গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে থাকে, তাকে বায়ুমণ্ডল বলে।
     জীবনধারণের জন্য পৃথিবীর জীবকুলের কাছে যেসব জিনিস অপরিহার্য, বায়ুমণ্ডল তাদের মধ্যে অন্যতম।
     বায়ুমণ্ডলের বর্ণ, গন্ধ, আকার—কিছুই নেই। তাই একে খালি চোখে দেখা যায় না। শুধু অনুভব করা যায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বায়ুমণ্ডল বিস্তৃত। নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, আরগন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, নিয়ন, হিলিয়াম, ক্রিপটন, জেনন, মিথেন, ওজোন, নাইট্রাস অক্সাইড, জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও কণিকা মিলে বায়ুমণ্ডল গঠিত।

৫।    মহীসোপান কী?
     উত্তর : সমুদ্রের উপকূলরেখা থেকে তলদেশ ক্রমনিম্ন নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে।
     পৃথিবীর মহাদেশগুলোর চারদিকে স্থলভাগের কিছু অংশ অল্প ঢালু হয়ে সমুদ্রের পানির মধ্যে নেমে গেছে। একেই মহীসোপান বলে। মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা ১৫০ মিটার। এটি ১০ কোণে সমুদ্র তলদেশে নিমজ্জিত থাকে। মহীসোপানের গড় প্রশস্ততা ৭০ কিলোমিটার।

৬।    জনসংখ্যার ঘনত্ব বলতে কী বোঝো?
     উত্তর : কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা ও মোট ভূমির পরিমাণ বা আয়তনের অনুপাতকে জনসংখ্যার ঘনত্ব বলে।
     পৃথিবীর বা কোনো দেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব জানতে হলে পৃথিবী বা সে দেশের মোট জনসংখ্যা ও আয়তন জানতে হবে।
     জনসংখ্যার ঘনত্ব :
     বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব = ১,০১৫ জন প্রতিবর্গকিলোমিটারে।
     উল্লেখ্য, দেশের জনসংখ্যার তুলনায় আয়তন বড় হলে তার জনসংখ্যার ঘনত্ব কমে আসে। আর ঘনত্ব বেশি হলে তা ভূমির ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

৭।    রৈখিক বসতি বলতে কী বোঝো?
     উত্তর : একই সরলরেখায় গড়ে ওঠা বাড়ির সমন্বয়ে যে বসতি গড়ে ওঠে, তাকে রৈখিক বসতি বলে।
     প্রধানত প্রাকৃতিক এবং কিছু ক্ষেত্রে সামাজিক কারণে এ ধরনের বসতি গড়ে ওঠে। নদীর প্রাকৃতিক বাঁধ, নদীর কিনারা, রাস্তার কিনারা প্রভৃতি স্থানে এ ধরনের বসতি গড়ে ওঠে। এ অবস্থায় গড়ে ওঠা পুঞ্জীভূত রৈখিক ধরনের বসতিগুলোর মধ্যে কিছুটা ফাঁকা থাকে। এই ফাঁকা স্থানটুকু ব্যবহৃত হয় খামার হিসেবে। বন্যামুক্ত সব উচ্চভূমি এ ধরনের বসতির জন্য সুবিধাজনক।

৮।    সম্পদ বলতে কী বোঝায়?
     উত্তর : যা কিছু নির্দিষ্ট প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও সামাজিক অবস্থায় ব্যবহার করা যায়, তা-ই সম্পদ।
     অবস্থানগত কারণে কোনো ভূমির মূল্য কম-বেশি হয়। তেমনি ব্যবহার জানার পর অপ্রয়োজনীয় বস্তুর প্রয়োজন হয়। এভাবেই কোনো বস্তু মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়। যেমন—পেট্রোলিয়ামের (খনিজ তেল) ব্যবহার ও উত্তোলন জানার সঙ্গে সঙ্গে এটি রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদে পরিণত হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, বস্তুর কার্যকারিতাই সম্পদ।

৯।    বাংলাদেশের সীমারেখা নির্দেশ করো।
     উত্তর : বাংলাদেশের উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় ও আসাম রাজ্য, পূর্বে আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্য ও মিয়ানমার, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত।
     বাংলাদেশের সর্বমোট সীমারেখা ৭,৭১১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশের সীমারেখার দৈর্ঘ্য ৩,৭১৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমারেখার দৈর্ঘ্য ২৮০ কিলোমিটার এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের তটরেখার দৈর্ঘ্য ৭১৬ মিটার। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে হাড়িয়াভাঙ্গা নদী এবং দক্ষিণ-পূর্বে নাফ নদ ভারত ও মিয়ানমারের সীমানায় অবস্থিত।

১০।   বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প সম্পর্কে লেখো।
     উত্তর : প্রাকৃতিক ঋতুবৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ পর্যটনশিল্পের জন্য বিখ্যাত। এ দেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রত্ননিদর্শন, বাঙালি সংস্কৃতি প্রভৃতি পর্যটনশিল্প লক্ষ করা যায়।
     বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় পর্যটনকেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুময় সমুদ্রসৈকত, ম্যানগ্রোভ বন, দ্বীপ, হ্রদ, নদী, পাল তোলা নৌকার অনুপম দৃশ্যাবলি ও সমুদ্র শ্যামলিমা ঘেরা পাহাড়ি ভূমি। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত, কুয়াকাটার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য, সিলেটের পাহাড়, হাওর, চা বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য প্রভৃতি এ দেশের উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র। এ দেশে রয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার, মঠসহ প্রাচীন সভ্যতার নানা নিদর্শন। এসব প্রত্ননিদর্শন পর্যটকদের কাছে খুব আকর্ষণীয়। এ ছাড়া এ দেশের আদিবাসীদের সংস্কৃতিও পর্যটনশিল্পের সম্ভাবনাময় উপাদান। প্রতিবছর দেশ-বিদেশ থেকে বহু পর্যটক এ দেশে ভ্রমণ করতে আসেন।

১১।   যোগাযোগব্যবস্থা বলতে কী বোঝায়?
     উত্তর : যাত্রী, পণ্য পরিবহন করে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের মাধ্যমে অর্থনীতিতে কার্যকর অবদান রাখে যোগাযোগব্যবস্থা।
     এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কাঁচামাল ও লোকজনের নিয়মিত চলাচল, উৎপাদিত দ্রব্যের সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ, উৎপাদনের উপকরণগুলোর গতিশীলতা বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা আনয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে যোগাযোগব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যোগাযোগব্যবস্থা বাণিজ্যকে প্রভাবিত করে। বাণিজ্য অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা কৃষি, শিল্প প্রভৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে।

১২। খরা বলতে কী বোঝো?
     উত্তর : দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে যে অবস্থা হয়, তাকে খরা বলে।
     অনেক দিন বৃষ্টিহীন অবস্থা থাকলে অথবা অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে মাটির আর্দ্রতা কমে যায়। সেই সঙ্গে মাটি তার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য বা কোমলতা হারিয়ে রুক্ষ রূপ গ্রহণ করে খরায় পরিণত হয়। খরার প্রভাবে কৃষিজ ফসলের উৎপাদন কমে যায়, পানির অভাব দেখা দেয়, প্রবল উত্তাপে বিভিন্ন ধরনের অসুখের প্রাদুর্ভাব ঘটে। পরিবেশ রুক্ষ হয়ে ওঠে, অগ্নিকাণ্ডের উপদ্রব বেড়ে যায়। মানুষ ও জীবজগতের স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। বনজসম্পদ বৃদ্ধি তথা অধিক বৃক্ষ রোপণ করে এবং ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমিয়ে খরা নামের প্রাকৃতিক দূর্যোগ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
•    উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
     সিফাত দশম শ্রেণির ছাত্র। ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, মহাবিশ্ব, মানচিত্র সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞান। অবসর সময়ে সিফাত তার ছোট ভাই-বোনদের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।
     (ক) ‘জীব সম্প্র্রদায়ের পারিপার্শ্বিক জৈব ও প্রাকৃতিক অবস্থাকে পরিবেশ বলে’ —উক্তিটি কার?
     (খ) ছায়াপথ বলতে কী বোঝো?
     (গ) উদ্দীপকে সিফাত কোন বিষয় পাঠ করে—ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, মহাবিশ্ব, মানচিত্র সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছে? ব্যাখ্যা করো।
     ঘ) তুমি কি মনে করো মানুষের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃৃতির জন্য ওই বিষয় পাঠ করা প্রয়োজন? তোমার মতের স্বপক্ষে যুক্তি দাও ।
     উত্তর :
     (ক) ‘জীব সম্প্র্রদায়ের পারিপার্শ্বিক জৈব ও প্রাকৃতিক অবস্থাকে পরিবেশ বলে’ —উক্তিটি পরিবেশ বিজ্ঞানী আর্মসের।
     (খ) গ্যালাক্সির ক্ষুদ্র অংশকে ছায়াপথ বলে।
     অন্ধকার আকাশে এদের উজ্জ্বল দীপ্ত দীর্ঘ পথের মতো দেখায়। শীতকালে রাতের বেলা পরিষ্কার আকাশে লক্ষ করলে উত্তর-দক্ষিণে বেশ বড় পরিসরযুক্ত দীর্ঘ আলোর রেখা দেখা যায়। তারকা খচিত এ আলোর পথই হলো ছায়াপথ। বিজ্ঞানীরা একে বিরাট চক্রাকার মণ্ডল বলে অনুমান করেন। সৌরজগৎ এ রকম একটি ছায়াপথের অন্তর্গত। এর অন্য নাম আকাশগঙ্গা।
     (গ) উদ্দীপকে সিফাত ভূগোল ও পরিবেশ বিষয় পাঠ করে ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, মহাবিশ্ব, মানচিত্র সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছে।
     পৃথিবী ও এর অধিবাসীদের বর্ণনাই হচ্ছে ভূগোল। পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপব্যবস্থাগুলো কিভাবে সংগঠিত হচ্ছে এবং এসব প্রাকৃতিক বিষয় বা অবয়বের সঙ্গে মানুষ নিজেকে কিভাবে বিন্যস্ত করে, তা ভূগোল পাঠে জানা যায়। ভূগোল হচ্ছে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত বিজ্ঞান। প্রকৃতিতে যা কিছু আছে তার বর্ণনা ও আলোচনা এর অন্তর্ভুক্ত।
     উদ্দীপকে সিফাত যেসব বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেছে, তা ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের অন্তর্গত। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে নানা রকম পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং মানুষ ও মানুষের বিভিন্ন রকম সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং রয়েছে তাদের বিচিত্র রকমের জীবনধারা। এসব বিষয় আধুনিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়। সুতরাং ভূগোল একদিকে প্রকৃতির বিজ্ঞান, অন্যদিকে পরিবেশ ও সমাজের বিজ্ঞান। পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ তার জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। পৃথিবীর জলবায়ু ভূ-প্রকৃতি, উদ্ভিদ, প্রাণী, নদ-নদী, সাগর, খনিজ সম্পদ তার জীবনযাত্রাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। তার ক্রিয়াকলাপ তার পরিবেশে ঘটায় নানা রকম পরিবর্তন। ঘরবাড়ি, অফিস-আদালত, রাস্তাঘাট, শহর-বন্দর নির্মাণ প্রকৃতি ও পরিবেশকে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত করে। বনভূমি কেটে তৈরি হয় গ্রাম বা শহরের মতো লোকালয়। খাল-বিল, পুকুর ভরাট হয়। মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে এই মিথস্ক্রিয়ার একটি সম্পর্ক আছে। এ সম্পর্কের মূল হচ্ছে কার্যকারণ। ভূগোলের প্রধান কাজ হলো এই কার্যকারণ উদ্ঘাটন করা। পৃথিবীর পরিবেশের সীমার মধ্যে থেকে মানুষের বেঁচে থাকার যে সংগ্রাম চলছে, সে সম্পর্কে যুক্তিপূর্ণ আলোচনাই ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যার কাজ। উদ্দীপকে সিফাত এসব বিষয়েই জ্ঞান লাভ করেছে। তাই বলা যায়, সিফাত ভূগোল ও পরিবেশ বিষয় পাঠ করে এসব জ্ঞান লাভ করেছে।
     (ঘ) হ্যাঁ, আমি মনে করি, মানুষের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃতির জন্য ওই বিষয় বা ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা পাঠ করা প্রয়োজন।
     ভূগোল পাঠে ভূমিরূপবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, সমাজবিদ্যা, অর্থনীতি ও রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। এসব জ্ঞান থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন, নতুন নতুন আবিষ্কার, চিন্তা-ধারণার বিকাশ ও সমাজের মূল্যবোধের পরিবর্তন করা যায়।
     উদ্দীপকে সিফাতের মধ্যে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লক্ষ করা যায়। কারণ ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, মহাবিশ্ব, মানচিত্র—এগুলো ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত। মানুষের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃতির জন্য এ বিষয় পাঠ করা খুবই প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কেননা এ বিষয় অধ্যয়নের মাধ্যমে নিম্নোক্ত বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা যায়।
•    পৃথিবীর কোনো স্থানের প্রকৃতি ও পরিবেশ।
•    পাহাড়, পর্বত, নদী, সাগর, মালভূমি, সমভূমি, মরুভূমি—এগুলোর গঠনের কারণ ও বৈশিষ্ট্য।
•    পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে কিভাবে জীবজগতের উদ্ভব হয়েছে, সে বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত ধারণা অর্জন।
•    পৃথিবীর বিভিন্ন পরিবেশের উদ্ভিদ ও প্রাণী এবং এদের আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার বৈচিত্র্য।
•    কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতির ফলে মানুষের সামাজিক পরিবেশের কী পরিবর্তন হয়েছে।
•    প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টির কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও নিয়ন্ত্রণ, ভূ-প্রকৃতির অবস্থান, জলবায়ুর ধরন ও যোগাযোগব্যবস্থার গুরুত্ব অনুযায়ী ভূমি ব্যবস্থাপনা।
•    পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি, গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া ও এর প্রভাব।
•    প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন।
   সমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা।
     উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, মানুষের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত বিষয় বা ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা পাঠ খুবই প্রয়োজন।

======================================

সঠিক উত্তরের বৃত্তটি ভরাট কর। প্রতিটি প্রশ্নের মান-১।

১। সামরিক ক্রিয়াকলাপ ভিত্তিক নগর কোনটি?
ক) স্কটল্যান্ডের এডিনবরা খ) অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা
গ) মরক্কোর ফেজ ঘ) ভারতের নালন্দা

২। আয়রন অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড দ্বারা সমৃদ্ব মণ্ডল কোনটি?
ক) কেন্দ্রমণ্ডল খ) নিম্ন গুরুমণ্ডল গ) অশ্মমণ্ডল ঘ) ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল

৩। ইরাটসথেনিস কোন দেশের ভূগোলবিদ ছিলেন?
ক) আমেরিকা খ) ফ্রান্স গ) স্পেন ঘ) গ্রিস

৪। কক্সবাজারের একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হল-
i) হিমছড়ি ii) নীলগিরি iii) ইনানি বিচ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i খ) i ও iii গ) ii ও iii ঘ) i, ii ও iii

৫। কোন তারিখে দিন রাত্রি সমান থাকে?
ক) ২১ ফেব্রুয়ারি খ) ২১ জুন
গ) ২১ মার্চ ঘ) ২১ মে

৬। যমুনা নদীর পূর্বাংশে কোন ধরনের রেলপথ চালু আছে?
ক) মিটার গেজ খ) ব্রড গেজ
গ) ডুয়েল গেজ ঘ) ন্যারো গেজ

৭। সম্পদকে প্রাথমিকভাবে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক) ২ খ) ৩ গ) ৪ ঘ) ৫

৮। মহাদেশীয় জলবায়ুর আরেক নাম কী?
ক) চরমভাবাপন্ন জলবায়ু খ) মৃদুভাবাপন্ন জলবায়ু
গ) সমভাবাপন্ন জলবায়ু ঘ) বিষমভাবাপন্ন জলবায়ু

৯। জিপিএস-এর সুবিধা হল-
i. সকলেই এটি চালাতে পারে ii. সহজে অক্ষাংশ নির্ণয় করা যায়
iii. ঝামেলা ছাড়াই জমির সীমানা চিহ্নিত করা যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i খ) i, ii গ) ii, iii ঘ) i,ii,iii

১০। বাংলাদেশের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কত?
ক) ২১০০ মি.মি. খ) ২২০০ মি.মি. গ) ২৩০০ মি.মি. ঘ) ২৪০০ মি.মি.

১১। দুই বা ততোধিক নদীর মিলনস্থলকে কী বলে?
ক) নদীসঙ্গম খ) মোহনা গ) দোয়াব ঘ) নদীগর্ভ

১২। বাংলাদেশে কত জাতের পাখি রয়েছে?
ক) ১১৯ খ) ১২৪ গ) ৩৮৬ ঘ) ৫৭৮

১৩। মৃত আগ্নেয়গিরির উদাহরণ হল-
i. ইতালির ভিসুভিয়াস ii. আলাস্কার মাউন্ট আডাকামা iii. নিকারাগুয়ার কোসেগায়না
নিচের কোনটি সঠিক
ক) i, ii খ) i, iii গ) ii, iii ঘ) i, ii, iii

১৪। পৃথিবীর ভূমিরূপ ও এর গঠন প্রক্রিয়া কোন ভূগোলের আলোচ্য বিষয়?
ক) সামাজিক ভূগোল খ) মানব ভূগোল গ) প্রাকৃতিক ভূগোল ঘ) শিল্প 
ভূগোল

নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ১৫-১৬নং প্রশ্নের উত্তর দাও
সন্ধ্যার আকাশে সন্ধ্যাতারা দেখে শশী তার মাকে জিজ্ঞেস করলে, তার মা জানাল এটি আসলে তারা নয়, একটি গ্রহ।

১৫। সন্ধ্যার আকাশে যেটি সন্ধ্যাতারা, ভোরের আকাশে সেটি কী?
ক) মেঘ তারা খ) তারকারাজি গ) শুকতারা ঘ) নৈশতারা

১৬। কেন আমরা এদেরকে তারা বলে ভুল করে থাকি?
ক) নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করে বলে খ) এদের নিজেদের আলো আছে বলে
গ) এরা নক্ষত্র বলে ঘ) এরা পৃথিবীর নিকটে বলে

১৭। রোহিঙ্গাদের এদেশে অভিবাসন কোন ধরনের অভিবাসন?
ক) অবাধ অভিবাসন খ) বলপূর্বক অভিবাসন
গ) আকর্ষণমূলক অভিবাসন ঘ) স্থায়ী অভিবাসন

১৮। প্রশান্ত মহাসাগরের গড় গভীরতা কত?
ক) ৩৯৩২ মিটার খ) ৩৯৬২ মিটার
গ) ৪১২০ মিটার ঘ) ৪২৭০ মিটার

১৯। কত সালে ফুকো দোলকের সাহায্যে আহ্নিক গতির পরীক্ষা করেন?
ক) ১৮১৫ খ) ১৮৪৯ গ) ১৮৫১ ঘ) ১৮৯১

২০। ডেনমার্কের রাজধানী কোথায়?
ক) সিউল খ) বেইজিং
গ) জোহেনসবার্ক ঘ) কোপেনহেগেন

২১। বাংলাদেশ মিয়ানমারের সীমারেখার দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
ক) ২৮০ খ) ৩২০ গ) ৪২৫ ঘ) ৭১৬

২২। শতাধিক শ্রমিকের সমন্বয়ে গড়ে উঠা শিল্পকে কী ধরনের শিল্প বলে?
ক) ক্ষুদ্র শিল্প খ) মাঝারি শিল্প গ) বৃহৎ শিল্প ঘ) শ্রম শিল্প

২৩। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য খাদ্যশস্য হল-
i ) চা ii) গম iii) ধান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii খ) i ও iii গ) ii ও iii ঘ) i,ii ও iii

২৪। পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র কোনটি?
ক) প্রক্সিমা সেন্টারাই খ) বুধ গ) সূর্য ঘ) ট্রাইটন

২৫। বাংলাদেশে সর্বমোট রেলস্টেশন রয়েছে কতটি?
ক) ২২৯টি খ) ৩১৬টি
গ) ৪২১টি ঘ) ৪৪৩টি

২৬। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির বিজ্ঞান একাডেমি কত সালে ভূগোলের সংজ্ঞা দিয়েছেন?
ক) ১৯৬০ খ) ১৯৬৪ গ) ১৯৬৫ ঘ) ১৯৭০

২৭। কোন যন্ত্রের সাহায্যে গ্রহগুলোকে সূর্যের চারদিকে ঘুরতে দেখা যায়?
ক) অনুবীক্ষণ যন্ত্র খ) দূরবীক্ষণ যন্ত্র গ) মেক্সটেন্ট যন্ত্র ঘ) সিসমোগ্রাফ

২৮। বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারিভাবে কয়টি কাগজকল রয়েছে?
ক) ২টি খ) ৪টি
গ) ৬টি ঘ) ৭টি

২৯। সামাজিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত বিষয় হল-
i) শিক্ষা ii) রাজনীতি iii) মূল্যবোধ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii খ) i ও iii গ) ii ও iii ঘ) i,ii ও iii

৩০। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে শতকরা কত রফতানি বাণিজ্য সম্পন্ন হয়?
ক) ৫০ খ) ৬০ গ) ৭০ ঘ) ৮০






উত্তর :

১-ক, ২-খ, ৩-ঘ, ৪-খ, ৫-গ, ৬-ক, ৭-খ, ৮-ক, ৯-গ, ১০-গ, ১১-ক, ১২-ঘ, ১৩-গ, ১৪-ঘ, ১৫-গ, ১৬-ক, ১৭-খ, ১৮-ঘ, ১৯-গ, ২০-ঘ, ২১-ক, ২২-খ, ২৩-গ, ২৪-ক, ২৫-ঘ, ২৬-গ, ২৭-খ, ২৮-গ, ২৯-ঘ, ৩০-ঘ।