ICT ব্যবহারে নৈতিকতা, সমাজ জীবনে ICT এর প্রভাব, ICT ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন
Posted By:
Mostafa Kamal
Researcher of DCPL
& BDTP / Ph.D (Study)
Affiliated Ph.D
Researcher of IOUT & Academic Associate of
Shikshakendra, Hati
More, Subash Pally, Siliguri, W.B. INDIA
Contact : +88-01911
450 131; E-mail:aboutdynamic@gmail.com
=====================================
যে কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারকারী ব্যক্তির নৈতিকতার বিষয়ে নিম্নলিখিত নিয়মসমূহ মেনে চলা উচিৎঃ
·
১। প্রতিষ্ঠানের সকল গোপনীয় তথ্যের গোপনীয়তা এবং বিশ্বস্ততা রক্ষা করা।
·
২। কোন তথ্যের ভুল উপস্থাপন না করা।
·
৩। অনুমোদন ছাড়া চাকুরিদাতার সম্পদ ব্যবহার না করা।
·
৪। অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে চ্যাট বা ইন্টারনেট ব্রাউজ করে অযথা সময় নষ্ট না করা।
·
৫। ইন্টারনেটে অন্যের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন না করা।
·
৬। ভাইরাস ছড়ানো, স্প্যামিং ইত্যাদি কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করা।
একজন সুনাগরিকের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে যে নৈতিকতা মেনে চলা উচিৎঃ
·
১। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজের দক্ষতা ও জ্ঞান কাজে লাগিয়ে জনগণকে সাহায্য করা।
·
২। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং নীতিমালা মেনে চলা।
·
৩। জনগণের সমস্যার কারণ হয় এমন কোন তথ্যের ভুল উপস্থাপন না করা।
·
৪। ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য অবৈধভাবে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার না করা।
কম্পিউটার ইথিকস এর বিষয়ে দশটি নির্দেশনাঃ
·
১। অন্যের ক্ষতি করার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার না করা।
·
২। অন্য ব্যক্তির কম্পিউটারের কাজের উপর হস্তক্ষেপ না করা।
·
৩। অন্য ব্যক্তির ফাইলসমূহ হতে গোপনে তথ্য সংগ্রহ না করা।
·
৪। চুরির উদ্দেশ্যে কম্পিউটার ব্যবহার না করা।
·
৫। মিথ্যা সাক্ষ্য প্রমাণ বহনের জন্য কম্পিউটারকে ব্যবহার না করা।
·
৬। পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার না করা।
·
৭। অনুমতি ব্যতিরেকে অন্যের কম্পিউটার রিসোর্স ব্যবহার না করা ।
·
৮। অন্যের বুদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত ফলাফলকে আত্নসাৎ না করা।
·
৯। প্রোগ্রাম লেখার পূর্বে সমাজের উপর তা কী ধরণের প্রভাব ফেলবে সেটি চিন্তা করা।
·
১০। কম্পিউটারকে ওই সব উপায়ে ব্যবহার করা যেন তা বিচার বিবেচনা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।
সফটওয়্যার পাইরেসিঃ সফটওয়্যার পাইরেসি বলতে অনুমোদিত মালিক বা প্রস্তুতকারীর বিনা অনুমতিতে কোন সফটওয়্যার কপি করা, ব্যবহার করা, নিজের নামে বিতরণ করা কিংবা কোন প্রকার পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া ইত্যাদি কার্যক্রমকে বুঝায়।
সাইবার ক্রাইমঃ ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে যে সকল কম্পিউটার ক্রাইম সংঘটিত হয় তাদেরকে বুঝায়।
সাইবার আক্রমণঃ সাইবার আক্রমণ এক ধরণের ইলেক্ট্রনিক আক্রমণ যাতে ক্রিমিনালরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য কারও সিস্টেমে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে ফাইল, প্রোগ্রাম কিংবা হার্ডওয়্যার ধ্বংস বা ক্ষতি সাধন করে।
হ্যাকিংঃ সাধারণত হ্যাকিং একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কেউ কোন বৈধ অনুমতি ব্যতীত কোন কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে। যারা হ্যাকিং করে তারা হচ্ছে হ্যাকার। মোবাইল ফোন, ল্যান্ড ফোন, গাড়ি ট্র্যাকিং, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও ডিজিটাল যন্ত্র বৈধ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে তা ও হ্যাকিং এর আওতায় পড়ে। হ্যাকাররা সাধারনত এসব ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের ত্রুটি বের করে তা দিয়েই হ্যাক করে। হ্যাকারদের চিহ্নিত করা হয় Hat বা টুপি দিয়ে। তিন প্রকারের হ্যকার রয়েছে। যথাঃ
·
১। White hat hacker
·
২। Grey hat hacker
·
৩। Black hat hacker
White hat hacker: একজন white hat
hacker একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো বের করে এবং ঐ সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিককে ত্রুটির বিষয়ে দ্রুত অবহতি করে। সিকিউরিটি সিস্টেমটি হতে পারে একটি কম্পিউটার, একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, একটি ওয়েবসাইট, একটি সফটওয়্যার ইত্যাদি।
Grey hat hacker: একজন Grey hat hacker যখন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো খুজে বের করে তখন সে তার মন মত কাজ করে। সে ইচ্ছে করলে ঐ সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিককে ত্রুটি জানাতে পারে অথবা তথ্য নিজের স্বার্থের জন্য ব্যবহারও করতে পারে। বেশির ভাগ হ্যকার এ ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে।
Black hat hacker: একজন Black hat
hacker যখন কোন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি খুজে বের করে, তখন দ্রুত ঐ ত্রুটি কে নিজের স্বার্থে কাজে লাগায়। অর্থাৎ ঐ সিস্টেমটি নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে নেয় অথবা ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সিস্টেমটি নষ্ট করে দেয়।
স্প্যাম: ই-মেইল একাউন্টে প্রায়ই কিছু কিছু অচেনা ও অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল পাওয়া যায় যা আমাদের বিরক্তি ঘটায়। এই ধরণের ই-মেইলকে সাধারণত স্প্যাম মেইল বলে। যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট কোন একটি ইমেইল অ্যাড্রেসে শতশত এমনকি লক্ষ লক্ষ মেইল প্রেরণের মাধ্যমে সার্ভারকে ব্যস্ত বা সার্ভারের পারফর্মেন্সের ক্ষতি করে বা মেমোরি দখল করার এই পদ্ধতিকে স্প্যামিং বলে।
স্পুফিং: স্পুফিং শব্দের অর্থ হলো প্রতারনা করা, ধোঁকা দেওয়া। নেটওয়ার্ক সিকিউরিটির ক্ষেত্রে স্পুফিং হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে কোন ব্যক্তি বা কোন একটি প্রোগ্রাম মিথ্যা বা ভুল তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে বিভ্রান্ত করে এবং এর সিকিউরিটি সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করে অনৈতিকভাবে সুবিধা আদায় করে।
ফিশিং( Phishing): ইন্টারনেট ব্যবস্থায় কোনো সুপ্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট সেজে প্রতারণার মাধ্যমে কারো কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ব্যবহারকারী নাম ও পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করাকে ফিশিং বলে। ইমেইল ও ইন্সট্যান্ট মেসেজের মাধ্যমে সাধারণত ফিশিং করা হয়ে থাকে। প্রতারকেরা তাদের শিকারকে কোনোভাবে ধোঁকা দিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়। ঐ ওয়েবসাইটটি সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর ইমেইল, ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ডের আসল ওয়েবসাইটের চেহারা নকল করে থাকে। ব্যবহারকারীরা সেটাকে আসল ওয়েবসাইট ভেবে নিজের তথ্য প্রদান করলে সেই তথ্য প্রতারকদের হাতে চলে যায়।
ভিশিং(Vishing): মোবাইল, টেলিফোন, ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন ফোন বা অডিও ব্যবহার করে ফিশিং করাকে ভিশিং বা ভয়েস ফিশিং বলা হয়। যেমনঃ ফোনে লটারী বিজয়ের কথা বলে এবং টাকা পাঠানোর কথা বলে ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া।
প্লেজিয়ারিজম( Plagiarism ): কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোন সাহিত্য, গবেষণা বা সম্পাদনা কর্ম হুবহু নকল বা আংশিক পরিবর্তন করে নিজের নামে প্রকাশ করাই হলো প্লেজিয়ারিজম।
সমাজ জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাবঃ
·
১। খুব সহজে তথ্য পাওয়া যায়।
·
২। পৃথিবীর যেকোন স্থানে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা যায়।
·
৩। জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে।
·
৪। মানুষের কাজের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
·
৫। ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হয়েছে ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
·
৬। চিকিৎসা ক্ষেত্রে সেবা পাওয়া সহজ হয়েছে।
·
৭। শিক্ষা গ্রহণ বা প্রদান করা সহজতর হয়েছে।
সমাজ জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাবঃ
·
১। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় যুবক বা বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের বিপথগামী হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
·
২। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নষ্ট হচ্ছে।
·
৩। মানুষ যন্ত্রনির্ভর হওয়ায় বেকারত্ব বেড়ে যাচ্ছে ফলে অপরাধ কর্ম বেশি সংঘঠিত হচ্ছে।
·
৪। ভিনদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসনে দেশি সংস্কৃতি হারাতে চলছে।
·
৫। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে ফলে বিবাহ-বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।