(ঔপনিবেশিক যুগ ও
বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম)
১। উত্তর বাংলায় বাঙালি শাসক শশাঙ্ক কর্তৃক স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় কত শতকে?
ক. সপ্তম শতকে খ. অষ্টম শতকে
গ. নবম শতকে ঘ. দশম শতকে
২। ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী কাকে পরাজিত করে বাংলার এক ছোট অংশ দখল করেন?
ক. হেমন্ত সেনকে খ. লক্ষ্মণ সেনকে
গ. বিজয় সেনকে ঘ. বল্লাল সেনকে
৩। কত সালে বাংলায় স্বাধীন সুলতানি শাসনের অবসান ঘটে?
ক. ১৩৩৮ সালে খ. ১৪৩৮ সালে
গ. ১৫৩৮ সালে ঘ. ১৬৩৮ সালে
৪। ‘ওয়েস্টফালিয়ার চুক্তিটি’ কত সালে সম্পাদিত হয়?
ক. ১৫৪৮ সালে খ. ১৫৫৮ সালে
গ. ১৬৪৮ সালে ঘ. ১৬৫৮ সালে
৫। ১৬৮২ সালে ইংরেজ কম্পানিগুলোর গভর্নর হিসেবে কে হুগলিতে আসেন?
ক. উইলিয়াম হেজেজ খ. ওয়ারেন হেস্টিংস
গ. রবার্ট ক্লাইভ ঘ. উইলিয়াম কেরি
৬। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করা হয়েছিল কত সালে?
ক. ১৭৮৩ সালে খ. ১৭৮৬ সালে
গ. ১৭৮৯ সালে ঘ. ১৭৯৩ সালে
৭। ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কত সালে হয়েছিল?
ক. বাংলা ১১৭৫ সালে খ. বাংলা ১১৭৬ সালে
গ. বাংলা ১১৭৭ সালে ঘ. বাংলা ১১৭৮ সালে
৮। ১৮৫৭ সালের সিপাহিদের বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন—
ক. সিপাহি মঙ্গল পাণ্ডে ও হাবিলদার রজব আলী
খ. সিপাহি সুকান্ত পাণ্ডে ও হাবিলদার কেরামত আলী
গ. সিপাহি দিলীপ পাণ্ডে ও হাবিলদার রহমত আলী
ঘ. সিপাহি পরিমল পাণ্ডে ও হাবিলদার তালেব আলী
৯। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সর্বপ্রথম বাংলা প্রদেশকে দ্বিখণ্ডিত করার পরিকল্পনা করা হয় কত সালে?
ক. ১৮৫১ সালে খ. ১৮৫২ সালে
গ. ১৮৫৩ সালে ঘ. ১৮৫৪ সালে
১০। নিম্নের কোন প্রতিষ্ঠানটি অপেক্ষাকৃত প্রাচীন?
ক. কলকাতা সংস্কৃত কলেজ খ. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
গ. শ্রীরামপুরের মুদ্রণযন্ত্র ঘ. কলকাতা মাদ্রাসা
১১। মুসলিম লীগ নামের রাজনৈতিক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে?
ক. ১৯০৫ সালে খ. ১৯০৬ সালে
গ. ১৯০৭ সালে ঘ. ১৯০৮ সালে
১২। ব্রিটিশ ভারতে প্রথম ভাইসরয় কে ছিলেন?
ক. লর্ড কার্জন খ. লর্ড ডালহৌসি
গ. লর্ড ক্যানিং ঘ. লর্ড উইলিয়াম বেন্টিং
১৩। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে মূলত কিসের ভিত্তিতে?
ক. একজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে খ. দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে
গ. ‘ভাগ করো-শাসন করো’ নীতির ভিত্তিতে ঘ. রিকার্ডোর তত্ত্বের ভিত্তিতে
১৪। ‘দি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি’ স্থাপিত হয় কত সালে?
ক. ১৬০০ সালে খ. ১৬১০ সালে
গ. ১৬২০ সালে ঘ. ১৬৩০ সালে
১৫। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ—
i. নবাবের ঘনিষ্ঠজনের ষড়যন্ত্র
ii. ক্ষমতালোভী ভারতীয় বণিক সমাজের ষড়যন্ত্র
iii. নবাবের অদূরদর্শিতা
নিম্নের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
১৬। আর্যদের শাসন মৌর্যদের শাসন গুপ্তদের শাসন ?
প্রশ্ন চিহ্নিত স্থানে কী হবে?
ক. পালদের শাসন প্রতিষ্ঠা খ. সেনদের শাসন প্রতিষ্ঠা
গ. রাজা শশাঙ্কের শাসন প্রতিষ্ঠা ঘ. স্বাধীন সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা
১৭। বাংলায় ঔপনিবেশিক শক্তির বিজয়ের কারণ—
i. শাসকদের প্রতি বাংলার জনগণের উদাসীনতা
ii. বাংলার সাধারণ জনগণের ধূর্ত পরিকল্পনা
iii. বাংলার শাসকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল
নিম্নের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
১৮। ব্রিটিশ শাসনের প্রভাবে এ উপমহাদেশে—
i. শিক্ষায় বিস্তার হয়
ii. কুসংস্কার দূর হয়
iii. নবজাগরণের সৃষ্টি হয়
নিম্নের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
১৯। নিম্নের কোন ঐতিহাসিক ঘটনাটি বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি করে?
ক. পলাশীর যুদ্ধ খ. বঙ্গভঙ্গ
গ. দ্বৈতশাসন ঘ. সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ
উত্তরগুলো মিলিয়ে নাও : ১. ক ২. খ ৩. গ ৪. গ ৫. ক ৬. ঘ ৭. খ ৮. ক ৯. গ ১০. ঘ ১১. খ ১২. গ ১৩. খ ১৪. ক ১৫. ঘ ১৬. গ ১৭. গ ১৮. ঘ ১৯. খ
সৃজনশীল প্রশ্ন
প্রথম অধ্যায়
১। বন্দরনগর স্কুলের শিক্ষা সফর আমঝুপির ইংরেজ কুঠি। আমবাগানের মাঝে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ইংরেজ কুঠিটি খুব সুন্দর। পাশেই নদী। হাসান স্যার বললেন, এই আমবাগান মনে করিয়ে দেয় পলাশীর আম্রকানন।ক) কত সালে ভারত শাসন আইন পাস হয়?
খ) ওয়েস্ট ফালিয়ার চুক্তির ফলাফল কী?
গ) পলাশীর আম্রকাননে কী ঘটেছিল? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে মোগল শাসনের অবসান ঘটে’—বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : ক) ১৮৫৮ সালের ২ আগস্ট ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারত শাসন আইন পাস হয়।
খ) ১৬৪৮ সালে ইউরোপের যুদ্ধরত বিভিন্ন দেশের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি হয়। একে বলে ওয়েস্ট ফালিয়ার চুক্তি। এটি সম্পাদিত হওয়ার পর শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে বিভিন্ন ইউরোপীয় জাতি নতুন উদ্যমে বাণিজ্যের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ে। এদের বেশির ভাগের লক্ষ্য ছিল ভারতবর্ষ। আবার তার মধ্যে বাংলার সিল্ক ও মিহি কাপড় এবং মসলা তাদের প্রধান আকর্ষণ হয়ে ওঠে। বহুকাল পর বাংলার বাণিজ্য খাতে বেশ রমরমা ভাব দেখা যায়।
তাই বলা যায়, এই বাণিজ্যের সফলতার মূলে ওয়েস্ট ফালিয়ার চুক্তি।
গ) উদ্দীপকে আমঝুপির আমবাগান দেখে পলাশীর আম্রকাননের কথা মনে পড়ে যায়। কেননা নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজধানী মুর্শিদাবাদ দখল করার জন্য লর্ড ক্লাইভ পলাশীর আম্রকাননে উপস্থিত হয়েছিল এবং পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয় ঘটে।
১৭৫৬ সালে আলীবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর ক্ষমতার উত্তরাধিকার নিয়ে নবাব পরিবার ও রাজপ্রাসাদের অভিজাতদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়, ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির কর্তারা এর সুযোগ নেয়। ২২ বছরের তরুণ নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে তাঁর খালা ঘসেটি বেগম, মীর জাফর, মীর কাসিমসহ রাজদরবারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এবং উমিচাঁদ, জগেশঠ, রাজবল্লভের মতো তত্কালীন ধনী অভিজাতদের একটি অংশ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে ইংরেজ বণিকরা তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। তা ছাড়া বাংলায় রাজপুতনা থেকে আসা মাড়োয়ারিরা ব্যবসায়িক স্বার্থে ইংরেজ বণিকদের সঙ্গে যোগ দেয়। এ সুযোগে মাদ্রাজ থেকে সৈন্য বাহিনী নিয়ে এসে ইংরেজ সেনাপতি ওয়াটসন ও ক্লাইভ কলকাতা দখল করে নেয়। এরপর নবাবের রাজধানী মুর্শিদাবাদ দখল করতে ক্লাইভ পলাশীর আম্রকাননে উপস্থিত হয়। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
যুদ্ধে প্রবীণ সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় বাংলা-বিহার-ওড়িশার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ঘটে এবং নবাবকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
ঘ) বাংলার স্বাধীন জমিদারদের পরাজিত করার মধ্য দিয়েই মোগল সাম্রাজ্যের বিস্তার লাভ এবং বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে মোগল সাম্রাজ্যের পতন।
১৫৩৮ সালে মোগল সম্রাট হুমায়ুন উত্তর বাংলার গৌড় দখল করে। তবে বাংলায় তখনো মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় না। মোগল সম্রাট আকবর ১৫৭৬ সালে পশ্চিম বাংলা ও উত্তর বাংলার অনেকটা অংশ অধিকার করলেও পূর্ব বাংলা দখল করতে পারে না। কারণ পূর্ব বাংলার শাসক ছিলেন বারোভুঁইয়া নামের জমিদাররা। তাঁরা একযোগে মোগল আক্রমণ প্রতিহত করেন। এরপর মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ১৬১০ সালে মোগল সুবেদার ইসলাম খাঁ চিশতি চূড়ান্তভাবে বারোভুঁইয়াদের পরাজিত করে ঢাকা অধিকার করেন। এভাবে বাংলায় মোগল অধিকার সম্পন্ন হয়। এই বিদেশি মোগল শাসন চলে আঠারো শতকের মাঝ পর্ব পর্যন্ত।
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে প্রবীণ সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় বাংলা-বিহার-ওড়িশার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ঘটে এবং নবাবকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর থেকেই মোগল শাসনের চূড়ান্ত অবসান ঘটে। বাংলার ক্ষমতা দখল করে আরেক বিদেশি শক্তি। শুরু হয় ইউরোপীয় শক্তির শাসন।
সুতরাং বলা যায়, ‘পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের মধ্য দিয়েই মোগল শাসনের অবসান ঘটে’—উক্তিটি যথার্থ।