সৃজনশীল প্রশ্ন
ষষ্ঠ শ্রেণি : বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
Posted
By:
Mostafa
Kamal
Researcher
of DCPL & BDTP / Ph.D (Study)
Affiliated
Ph.D Researcher of IOUT & Academic Associate of
Shikshakendra,
Hati More, Subash Pally, Siliguri, W.B. INDIA
Chairman
of Dynamic Youth Society, Public Library & Study Center
Samsabad,
P.S.- Panchbibi, Dist. Joypurhat, N.B. BANGLADESH.
Contact : +88-01911 450 131; E-mail: aboutdynamic@gmail.com
প্রথম অধ্যায়
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
রিপনের দাদা তার কাছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যের কথা
বলছিলেন। তিনি বলেন,
‘খেজুর গুড়ের জন্য ফরিদপুর ও চমচমের জন্য পোড়াবাড়ী বিখ্যাত এবং
রেশমি শাড়ির জন্য রাজশাহী উল্লেখযোগ্য।’
ক. প্রকৃতির মূল উপাদান কী?
খ. শিকার ও খাদ্য সংগ্রহভিত্তিক সমাজ বলতে কী বোঝো?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জায়গাগুলো বিখ্যাত হওয়ার
কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সভ্যতা বিকাশে ওই কারণের প্রভাব মূল্যায়ন করো।
উত্তর :
ক. প্রকৃতির মূল উপাদান হচ্ছে মাটি, পানি,
বায়ু এবং তাপ।
খ. যে সমাজের মানুষ শিকার ও খাদ্য সংগ্রহ করে জীবিকা
নির্বাহ করত, তাকে শিকার ও খাদ্য সংগ্রহভিত্তিক সমাজ বলা হয়।
শিকার ও খাদ্য সংগ্রহভিত্তিক সমাজের মানুষরা খাদ্য
উত্পাদন করতে পারত না। বনজঙ্গল থেকে তারা খাবার খুঁজে নিত আর শিকার করত। ফলমূল
সংগ্রহ, মাছ শিকার ও পশুপাখি শিকার ছিল এ সমাজের মানুষের প্রধান কাজ।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত জায়গাগুলো, অর্থাৎ
ফরিদপুর, পোড়াবাড়ী, রাজশাহী প্রভৃতি
অঞ্চল বিখ্যাত হওয়ার কারণ প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব।
মানুষের জীবন প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ দ্বারা
প্রভাবিত। মানুষ কখনো পরিবেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে
পরিবেশই তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এ জন্যই মানব সমাজের রীতিনীতি, আচার-আচরণ ও
সংস্কৃতির ওপর পরিবেশের প্রভাব স্পষ্ট।
উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে খেজুর গুড়ের জন্য
ফরিদপুর বিখ্যাত। ফরিদপুরের ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ খেজুর গাছ উত্পাদনের জন্য
উপযোগী। অধিক খেজুর গাছ জন্মানোর ফলে এ অঞ্চলটি খেজুর গুড়ের জন্য বিখ্যাত হয়েছে।
উদ্দীপকে আরো উল্লিখিত হয়েছে চমচমের জন্য পোড়াবাড়ী বিখ্যাত। ভৌগোলিক পরিবেশের
কারণে পোড়াবাড়ী ও তার আশপাশের মানুষ অধিক পরিমাণে গাভি পালন করে। ফলে ওই অঞ্চলে প্রচুর
দুধ পাওয়া যায়। দুধের সহজলভ্যতার কারণে সেখানে উন্নতমানের চমচম উত্পন্ন হয়।
উদ্দীপকে আরো বলা হয়েছে,
রেশমি শাড়ির জন্য রাজশাহী বিখ্যাত। ভৌগোলিক পরিবেশের কারণেই এ
অঞ্চলে প্রচুর তুঁতগাছ জন্মে এবং তুঁতগাছে রেশম কীট বাসা বাঁধে। সুতরাং লক্ষ করা
যাচ্ছে প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাবে ফরিদপুর, পোড়াবাড়ী,
রাজশাহী প্রভৃতি অঞ্চল বিশেষ ক্ষেত্রে বিখ্যাত হয়েছে।
ঘ. সভ্যতা বিকাশে প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের
প্রভাব ব্যাপক।
প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ মনুষ্য বসবাসের জন্য
অনুকূল হলে সেখানে মানব বসতি গড়ে ওঠে এবং সভ্যতার বিকাশ ঘটে। আর যে অঞ্চলে এর
বিপরীত চিত্র লক্ষ করা যায়,
সে অঞ্চলে সভ্যতার বিকাশ ঘটেনি।
আমরা লক্ষ করি পৃথিবীর সব প্রাচীন সভ্যতাই
নদী-তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে। যেমন—সিন্ধু নদের তীরে সিন্ধু সভ্যতা,
নীল নদের তীরে মিসরীয় সভ্যতা, টাইগ্রিস
ও ইউফ্রেটিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে মেসোপটেমীয় সভ্যতা গড়ে উঠেছে। মানুষের জীবন
ধারণের জন্য পানি ও কৃষি উত্পাদনের উপযোগী উর্বর ভূমি খুবই প্রয়োজন। নদী তীরবর্তী
অঞ্চলে প্রতিবছর বর্ষাকালে নদী প্লাবিত হয়ে জমিতে পলিমাটি পড়ে মাটি উর্বর হয়। নদী
তীরবর্তী অঞ্চলের জমিতে সহজে পানি সেচেরও ব্যবস্থা করা যায়। ফলে সেখানে সহজেই
প্রচুর ফসল উত্পন্ন হয়। নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক পরিবেশও ভালো
থাকে। স্বাভাবিক কারণেই সেখানে সভ্যতার বিকাশ ঘটে এবং তা টেকসই হয়। এ কারণেই নদী
তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠা সভ্যতাগুলো বেশি কাল স্থায়ী হয়েছে। প্রাচীন গ্রিক ও রোমান
সভ্যতা ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে বিকাশ লাভ করে। বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতা গঙ্গা
অববাহিকায় বিকাশ লাভ করেছে।
ওপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সভ্যতা
বিকাশে প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব অপরিসীম।
প্রথম অধ্যায়
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
রিপনের দাদা তার কাছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যের কথা
বলছিলেন। তিনি বলেন,
‘খেজুর গুড়ের জন্য ফরিদপুর ও চমচমের জন্য পোড়াবাড়ী বিখ্যাত এবং
রেশমি শাড়ির জন্য রাজশাহী উল্লেখযোগ্য।’
ক. প্রকৃতির মূল উপাদান কী?
খ. শিকার ও খাদ্য সংগ্রহভিত্তিক সমাজ বলতে কী বোঝো?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জায়গাগুলো বিখ্যাত হওয়ার
কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সভ্যতা বিকাশে ওই কারণের প্রভাব মূল্যায়ন করো।
উত্তর :
ক. প্রকৃতির মূল উপাদান হচ্ছে মাটি, পানি,
বায়ু এবং তাপ।
খ. যে সমাজের মানুষ শিকার ও খাদ্য সংগ্রহ করে
জীবিকা নির্বাহ করত,
তাকে শিকার ও খাদ্য সংগ্রহভিত্তিক সমাজ বলা হয়।
শিকার ও খাদ্য সংগ্রহভিত্তিক সমাজের মানুষরা খাদ্য
উত্পাদন করতে পারত না। বনজঙ্গল থেকে তারা খাবার খুঁজে নিত আর শিকার করত। ফলমূল
সংগ্রহ, মাছ শিকার ও পশুপাখি শিকার ছিল এ সমাজের মানুষের প্রধান কাজ।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত জায়গাগুলো, অর্থাৎ
ফরিদপুর, পোড়াবাড়ী, রাজশাহী প্রভৃতি
অঞ্চল বিখ্যাত হওয়ার কারণ প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব।
মানুষের জীবন প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ দ্বারা
প্রভাবিত। মানুষ কখনো পরিবেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে
পরিবেশই তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এ জন্যই মানব সমাজের রীতিনীতি, আচার-আচরণ ও
সংস্কৃতির ওপর পরিবেশের প্রভাব স্পষ্ট।
উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে খেজুর গুড়ের জন্য
ফরিদপুর বিখ্যাত। ফরিদপুরের ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ খেজুর গাছ উত্পাদনের জন্য
উপযোগী। অধিক খেজুর গাছ জন্মানোর ফলে এ অঞ্চলটি খেজুর গুড়ের জন্য বিখ্যাত হয়েছে।
উদ্দীপকে আরো উল্লিখিত হয়েছে চমচমের জন্য পোড়াবাড়ী বিখ্যাত। ভৌগোলিক পরিবেশের
কারণে পোড়াবাড়ী ও তার আশপাশের মানুষ অধিক পরিমাণে গাভি পালন করে। ফলে ওই অঞ্চলে প্রচুর
দুধ পাওয়া যায়। দুধের সহজলভ্যতার কারণে সেখানে উন্নতমানের চমচম উত্পন্ন হয়।
উদ্দীপকে আরো বলা হয়েছে,
রেশমি শাড়ির জন্য রাজশাহী বিখ্যাত। ভৌগোলিক পরিবেশের কারণেই এ
অঞ্চলে প্রচুর তুঁতগাছ জন্মে এবং তুঁতগাছে রেশম কীট বাসা বাঁধে। সুতরাং লক্ষ করা
যাচ্ছে প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাবে ফরিদপুর, পোড়াবাড়ী,
রাজশাহী প্রভৃতি অঞ্চল বিশেষ ক্ষেত্রে বিখ্যাত হয়েছে।
ঘ. সভ্যতা বিকাশে প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের
প্রভাব ব্যাপক।
প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ মনুষ্য বসবাসের জন্য
অনুকূল হলে সেখানে মানব বসতি গড়ে ওঠে এবং সভ্যতার বিকাশ ঘটে। আর যে অঞ্চলে এর
বিপরীত চিত্র লক্ষ করা যায়,
সে অঞ্চলে সভ্যতার বিকাশ ঘটেনি।
আমরা লক্ষ করি পৃথিবীর সব প্রাচীন সভ্যতাই
নদী-তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে। যেমন—সিন্ধু নদের তীরে সিন্ধু সভ্যতা,
নীল নদের তীরে মিসরীয় সভ্যতা, টাইগ্রিস
ও ইউফ্রেটিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে মেসোপটেমীয় সভ্যতা গড়ে উঠেছে। মানুষের জীবন
ধারণের জন্য পানি ও কৃষি উত্পাদনের উপযোগী উর্বর ভূমি খুবই প্রয়োজন। নদী তীরবর্তী
অঞ্চলে প্রতিবছর বর্ষাকালে নদী প্লাবিত হয়ে জমিতে পলিমাটি পড়ে মাটি উর্বর হয়। নদী
তীরবর্তী অঞ্চলের জমিতে সহজে পানি সেচেরও ব্যবস্থা করা যায়। ফলে সেখানে সহজেই
প্রচুর ফসল উত্পন্ন হয়। নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক পরিবেশও ভালো
থাকে। স্বাভাবিক কারণেই সেখানে সভ্যতার বিকাশ ঘটে এবং তা টেকসই হয়। এ কারণেই নদী
তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠা সভ্যতাগুলো বেশি কাল স্থায়ী হয়েছে। প্রাচীন গ্রিক ও রোমান
সভ্যতা ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে বিকাশ লাভ করে। বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতা গঙ্গা
অববাহিকায় বিকাশ লাভ করেছে।
ওপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সভ্যতা
বিকাশে প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব অপরিসীম।